Why we want our voice to be heard?

Pages

Friday, June 24, 2011

Santu Larma rejects charter review proposals (press statement of PCJSS)

Santu Larma rejects charter review proposals 


 
Dhaka, June 23 (bdnews24.com)—

Parbatya Chattagram Jana Sanghati Samiti (PCJSS) has rejected the proposals made for amending the constitution and demanded constitutional recognition of the indigenous or Adivasi people.

Chief of the pro-peace accord group Jyotirindra Bodhipriya Larma alias Santu Larma declared the organisation's stance on the issue at a press conference at a city hotel on Thursday.


He, however, did not elaborate what he would do if the demand is not met.


The indigenous people have long been demanding their recognition in constitution to safeguard their existence, which the government has so far refused.


Law minister Shafique Ahmed at a June 8 programme said: "Article 23 (Ka) will be added to the constitution during the current constitution amendment process".


"The state will preserve culture and tradition of the tribal and ethnic groups towards their development," the provision states.


Santu demanded that the proposed provision to label all the people of Bangladesh as Bangalee be withdrawn. "It's valueless, motivated and can never be accepted by the indigenous people."


He said the special parliamentary panel ignored the 14-point charter of demands provided by the indigenous communities.


"Instead, the proposal for insertion of a provision on culture and heritage is disgraceful and contrary to the indigenous people's identity."


Santu said indigenous people are Bangladeshi by citizenship, but not by a community. "All the individual groups must be recognised in the constitution," he demanded.


"The way Bangalees will not want to be treated as Chakma, thus Chakmas won't want to be Bangalee," Santu reasoned.


The matter of recognition of the indigenous people came to the fore recently following denial by Bangladesh's first secretary in the United Nations. At a session of the UN Forum on Indigenous Issues he had claimed there were no indigenous people in the country.


The law minister defined indigenous as being "those who have been forced out by a foreign conqueror, which was what happened after Christopher Columbus had discovered America. The same did Britain and Australia. Our situation is different."


Prime minister Sheikh Hasina on Apr 27 at a press conference said the same thing — "no indigenous", but the Santals.


However, many other government officials have been using the term 'indigenous' or 'Adivasi', while people in general also do the same.


The laws which bear the word indigenous include the Chittagong Hill Tracts Regulation of 1900, the Finance Act of 2010, the Small Ethnic Groups Cultural Institutes Act of 2010 and the Poverty Reduction Strategy Paper of 2010.


Santu also protested the government move to retain Islam as the state religion. "A state can't have a religion."


He demanded that Bismillah should be dropped from the constitution terming it discriminatory. "It'll turn people of other religions to second-grade citizens," he observed.


Pointing at the 1997 peace accord, Santu said the deal and other related laws must be implemented immediately.


The accord signed between PCJSS and the Awami League recognises the CHT as a region inhabited by tribal people, acknowledges its traditional governance system and the role of its chief,s and provides building blocks for regional autonomy. 



courtesy: bdnews24 


--------------------------------------------

Following is the report from The daily star:


'Recognise Adivasis as indigenous'

Parbatya Chattagram Jana Sanghati Samity (PCJSS) yesterday rejected some proposals made by the parliamentary special committee on constitutional amendment terming those “confusing” and “communal”.

The samity leaders demanded constitutional recognition of indigenous people as “indigenous” rather than “ethnic minority communities” or “tribal” to protect their social, political and economic rights, says a press release.

The special committee completely ignored demands of indigenous people. Such kind of proposal is a reflection of colonial mindset of the ruling class. It is not acceptable to Jumma people, said Jyotirindra Bodhipriya Larma (Santu Larma) while addressing a press conference at a city hotel yesterday.

Demanding withdrawal of the proposed provision terming people of Bangladesh as Bangalee, he said "As citizens, we are Bangladeshi but we are not Bangalees as a community." 

As per the proposal no 23 (Ka), the state will preserve culture and tradition of tribal and ethnic groups towards their development, he said.

Bangladesh Adivasi Forum General Secretary Sanjeeb Drong, Gono Forum leader Pankaj Bhattacharjee, and columnist Syed Abul Maksud were also present.


courtesy: The Daily Star
---------------------


 Following is the full press statement of PCJSS (in bangla)



সংবাদ সম্মেলন
২৩ জুন ২০১১

বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সুপারিশ এবং আদিবাসীদের অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন গ্রহণ করুন।

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, গত ৮ জুন ২০১১ সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে গঠিত বিশেষ কমিটি ৫১ দফা সম্বলিত সুপারিশ জাতীয় সংসদে পেশ করেছে। উল্লেখ্য যে, মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনী আইনকে বাতিল ঘোষণা এবং সংবিধানকে ’৭২-এর সংবিধানের মূলধারায় ফিরিয়ে নেয়ার ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী রায় দেয়ার ফলে সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় সংবিধানে আদিবাসীদের অস্বীকৃতির বিষয়টি সংশোধনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেই প্রত্যাশাকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে ২৬ অক্টোবর ২০১০ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির নিকট আদিবাসীদের জাতিগত পরিচিতি, ভাষা ও সংস্কৃতির স্বীকৃতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে প্রণীত আইনগুলোর আইনী হেফাজতসহ আদিবাসী অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বিশেষ শাসিত অঞ্চলের মর্যাদা প্রদান, জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় আদিবাসীদের জন্য আসন সংরক্ষণ, আদিবাসী অধিকার সম্বলিত বিধানাবলী সংশোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসীদের মতামত ও সম্মতি গ্রহণ এবং আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকারসহ ভূমি, ভূখন্ড ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অধিকার সংক্রান্ত ১৪টি সংশোধনী প্রস্তাব সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছিল।

কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে, সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি যে সকল সুপারিশ পেশ করেছে তাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কর্তৃক পেশকৃত সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিনামাকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত সুপারিশে আদিবাসী ও বাঙালী নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল জনগণকে ‘বাঙালী’ জাতি হিসেবে পরিচিত করা ও ’৭২-এর সংবিধানে গৃহীত চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক বিধানাবলী সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দাবীনামাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি কেবলমাত্র সংস্কৃতি ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত একটি নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজনের প্রস্তাব পেশ করেছে। ‘২৩ক’ নামে ১৫নং সুপারিশে বিশেষ কমিটি প্রস্তাব করেছে যে-

“২৩ক। উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি।- রাষ্ট্র বিভিন্ন উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।”

উক্ত সুপারিশে “আদিবাসী” শব্দের পরিবর্তে “উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে যা আদিবাসীদের জাতিগত পরিচিতির ক্ষেত্রে অসম্মানজনক ও বিভ্রান্তিকর। আদিবাসীদের “আদিবাসী” হিসেবে স্বীকৃতি লাভের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবিকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রত্যেক জাতির আত্মপরিচয়ের সহজাত অধিকারকে খর্ব করে অসম্মানজনক ও বিভ্রান্তিকর পরিচিতি চাপিয়ে দেয়ার দৃষ্টিভঙ্গি উপনিবেশিক, উগ্র সাম্প্রদায়িক, জাত্যাভিমানী ও আগ্রাসী মানসিকতারই প্রতিফলন বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে। এ ধরনের প্রস্তাব আদিবাসীদের নিকট কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আদিবাসী জুম্ম জনগণের স্বতন্ত্র নৃতাত্ত্বিক পরিচিতি ও ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক স্বকীয়তার আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বরাবরই একটি পৃথক শাসিত অঞ্চল হিসেবে শাসিত হয়ে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। এই বিশেষ শাসনব্যবস্থাকে সাংবিধানিক নিশ্চয়তা বিধানের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে প্রণীত ১৯৯৮ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও ১৯৯৮ সালের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনসমূহকে সংবিধানের প্রথম তফসিলে ‘কার্যকর আইন’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করাসহ সাংবিধানিকভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বিশেষ শাসিত অঞ্চলের মর্যাদা প্রদানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু উল্লেখিত কোন প্রস্তাব বিন্দুমাত্র আমলে না নিয়ে বিশেষ কমিটি কেবলমাত্র সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংক্রান্ত একটি বিভ্রান্তিকর নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজনের মাধ্যমে তথাকথিত সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব করেছে। এমনকি সংবিধানে নতুন একটি তফসিল সংযোজন করে সারা দেশের আদিবাসী জাতিসমূহের নামের তালিকা সন্নিবেশকরণের যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তাও সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।
আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি ব্যতীত কেবলমাত্র সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংক্রান্ত একটি বিভ্রান্তিকর নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজনের প্রস্তাব অর্থহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে। বলাবাহুল্য আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির অর্থ হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ভূমি অধিকার এর স্বীকৃতি যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবিধানে স্বীকৃতি প্রদানের উদাহরণ রয়েছে।

তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বিশেষ কমিটির ১৫নং সুপারিশ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং সাথে সাথে “উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়” হিসেবে নয়, “আদিবাসী” হিসেবে এবং সর্বোপরি আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আপনারা জানেন যে, মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনী আইনকে বাতিল ঘোষণা করে ’৭২-এর সংবিধানের মূলধারায় ফিরিয়ে নেয়ার যে ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী রায় দেয়া হয়েছে তাতে করে সংবিধানে একক জাতিরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তে বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটানোর ক্ষেত্র তৈরী হয়। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় যে, সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সুপারিশের ৬নং প্রস্তাবের মাধ্যমে আদিবাসী ও বাঙালী নির্বিশেষে দেশের সকল জনগণকে ‘বাঙালী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। উক্ত প্রস্তাবে বলা হয় যে-

“৬। নাগরিকত্ব।- (১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।
(২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিতি হইবেন।”
বলাবাহুল্য বাংলাদেশ একটি বহু জাতির, বহু ভাষার ও বহু সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। এ দেশে সংখ্যাধিক্য বাঙালি জাতি ছাড়াও অর্ধ শতাধিক আদিবাসী জাতি স্মরণাতীত কাল থেকে নিজস্ব সমৃদ্ধ সমাজ, সংস্কৃতি, রীতিনীতি, ধর্ম-ভাষা ও স্বতন্ত্র নৃতাত্ত্বিক পরিচিতি নিয়ে এ অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। বলাবাহুল্য, তাদের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাস, সামাজিক রীতিনীতি, প্রথা, ভৌগোলিক পরিবেশ, দৈহিক-মানসিক গঠন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনযাত্রা ইত্যাদি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালী জনগোষ্ঠী থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, এসব আদিবাসী জাতিসমূহকে বিশেষ কমিটির এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে “বাঙালী” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আদিবাসীরা নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশী, কিন্তু জাতি হিসেবে কোনক্রমেই বাঙালী নয়। তারা জাতি হিসেবে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, খাসি, সাঁওতাল, মুন্ডা, মাহাতো, বর্মন, ¤্রাে ইত্যাদি অর্ধ শতাধিক এক একটি স্বতন্ত্র জাতি।
উল্লেখ্য যে, আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ৬নং অনুচ্ছেদে “...বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙালী বলিয়া পরিচিত হইবেন” মর্মে বিধানের মাধ্যমে আদিবাসী জাতিসমূহকে “বাঙালী” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। সে সময় তৎকালীন গণপরিষদের সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্বতন্ত্র জাতিসত্তার অধিকারী আদিবাসী জাতিসমূহকে বাঙালী হিসেবে অভিহিত করার বিরুদ্ধে সংসদের ভেতরে ও বাইরে তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করেন। কিন্তু আজ চল্লিশ বছর পর আবার এসব আদিবাসী জাতিসমূহকে সংবিধানের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত অনুচ্ছেদে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে “বাঙালী” হিসেবে পরিচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে জাত্যাভিমান, আগ্রাসী মানসিকতা ও চরম জাতিগত বৈষম্যেরই প্রতিফলন বলে প্রতীয়মান হয়। এ থেকে এটাই প্রমাণ করে যে, বর্তমান ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী যতই দিন বদলের প্রতিশ্রুতি ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক উদার কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করুক না কেন তারা এখনো সেই অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক ও উগ্র বাঙালী জাত্যাভিমানের কুৎসিত খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বিশেষ কমিটির ৬নং সুপারিশের “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী” অংশটুকু সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং সাথে সাথে এই অংশটুকু বাতিল করার জোর দাবি জানাচ্ছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ.


সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি সংবিধানের মৌলিক অধিকার বিষয়ক তৃতীয় ভাগে “সংগঠনের স্বাধীনতা” সংক্রান্ত ১৭নং সুপারিশে যে সংযোজনী প্রস্তাব করেছে তা সংগঠনের স্বাধীনতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি মনে করে। উক্ত সুপারিশে (সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ) বলা হয়েছে যে-

“৩৮। সংগঠনের স্বাধীনতা।- জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সঙ্ঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সঙ্ঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি- (ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; (খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্য গঠিত হয়; (গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা (ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থী হয়।”
সংবিধানের “সংগঠনের স্বাধীনতা” সংক্রান্ত মূল অনুচ্ছেদের সাথে উপরোক্ত যে শর্তাংশ সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে তা সংগঠনের স্বাধীনতাকে বা কোন জনগোষ্ঠীর সংগঠন গড়ে তোলার স্বাধীনতাকে যেমন খর্ব করবে তেমনি অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে জাতিগত বৈষম্য ও আগ্রাসনকে বৃদ্ধি করবে।
উল্লেখ্য যে, ’৭২-এর সংবিধানে উক্ত সংগঠনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত অনুচ্ছেদের সাথে এই মর্মে শর্তাংশ ছিল যে, “তবে শর্ত থাকে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী কোন সাম্প্রদায়িক সমিতি বা সঙ্ঘ কিংবা অনুরূপ উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক অন্য কোন সমিতি বা সঙ্ঘ গঠন করিবার বা তাহার সদস্য হইবার বা অন্য কোন প্রকারে তাহার তৎপরতায় অংশ গ্রহণ করিবার অধিকার কোন ব্যক্তির থাকিবে না।”
তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বিশেষ কমিটির সুপারিশে উল্লেখিত শর্তাংশ বাতিল করে ’৭২-এর সংবিধানে সন্নিবেশিত শর্তাংশ পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনী আইনকে বাতিলের মাধ্যমে একদিকে যেমন ধর্মীয় বৈষম্যমূলক বিধানাবলীর বিলোপ করতঃ ’৭২-এর সংবিধানের চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পুনর্বহালের ঐতিহাসিক ও  যুগান্তকারী সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে তার মাধ্যমে দেশের সংবিধানকে মৌলবাদী খোলস থেকে বের করে গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রূপদানের ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে, সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি ১নং সুপারিশে সংবিধানের প্রারম্ভে ও প্রস্তাবনার উপরে “বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহিম” সন্নিবেশকরণ এবং ৩নং সুপারিশে “প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সম-মর্যাদা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করিবেন” মর্মে সংবিধানের ২ক অনুচ্ছেদে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করেছে।
উপরোক্ত প্রস্তাব বিশেষ কমিটির রাষ্ট্রীয় মূলনীতি সংক্রান্ত ৯নং সুপারিশ (সংবিধানের ৮ অনুচ্ছেদ) এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত ১২নং সুপারিশের (সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ) সাথে সাংঘর্ষিক ও বিরোধাত্মক। “ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা” সংক্রান্ত ১২নং সুপারিশে বলা হয়েছে যে-

“১২। ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য- (ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার, (ঘ) কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন- বিলোপ করা হইবে।”
এটা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, বিশেষ কমিটির সুপারিশে একদিকে ‘রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান’ বিলোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, অন্যদিকে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে মর্যাদা দেয়ার পরস্পর বিরোধী প্রস্তাব প্রদান করা হয়েছে। বস্তুতঃ “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” ও “ধর্ম নিরপেক্ষতা” একসঙ্গে চলতে পারে না। সংবিধানে “বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহিম” ও “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” রেখে কখনোই ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে পারে না। রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যার যার।
এই সংযোজনী প্রস্তাবে যদিও “হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সম-মর্যাদা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করার” কথা বলা হয়েছে কিন্তু কার্যতঃ এই প্রস্তাবের মাধ্যমে সংবিধানে ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে দেখার রাষ্ট্রীয় ধারাকে আরো পাকাপোক্ত করা হয়েছে।
তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বিশেষ কমিটির “বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহিম” ও “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” সংক্রান্ত ১নং ও ৩নং সুপারিশ বাতিল করার জোর দাবি জানাচ্ছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

অতি সম্প্রতি বর্তমান সরকারের তরফ থেকে জোরেসোরে বলা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। দেশে ভাষাগত সংখ্যালঘু যারা বাস করে তারা উপজাতি। আইএলও’র সংজ্ঞা অনুযায়ী কোনভাবেই তাদের আদিবাসী বলা যায় না। কারণ উপনিবেশিক শাসনামলের কারণে তারা কোনভাবেই আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো উচ্ছেদ হয়ে যাননি। বাংলাদেশে সে পরিস্থিতি নেই।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার মতো আদি বাসিন্দাদের পদানত করে দখল করার কোন বিষয় বাংলাদেশে ঘটেনি বলে যা বলা হচ্ছে তাও সর্বাংশে সঠিক নয়। আইএলও বিধান অনুযায়ী “যারা রাজ্য বিজয় কিংবা উপনিবেশ স্থাপনের কালে অথবা বর্তমান রাষ্ট্রের সীমানা নির্ধারণের কালে এই দেশে কিংবা যে ভৌগোলিক ভূখন্ডে দেশটি অবস্থিত সেখানে বসবাসকারী জাতিগোষ্ঠীর বংশধর” তাদেরকে আদিবাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন-কাল অথবা বর্তমান রাষ্ট্রের সীমানা নির্ধারণ-কাল থেকে আদিবাসীরা এই ভৌগোলিক ভূখন্ডে বা দেশে বসবাস করে আসছে। এটা ঐতিহাসিকভাবে বিদিত যে, ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডয়া কোম্পানীর নিকট বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাবের যখন পরাজয় ঘটে তখন বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য হিসাবে কোচ রাজ্য, অহোম রাজ্য, গারো ও খাসিয়া রাজ্য, ত্রিপুরা রাজ্য, চাকমা রাজ্য ও আরাকান রাজ্য ইত্যাদি ছিল। কালক্রমে এ সব রাজ্য ব্রিটিশ ভারতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশ বিভাগকালে ব্রিটিশ ভারতকে বিভক্ত করে ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হয় এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণ এ অঞ্চলের প্রথম জনজাতি বা ভূমিপুত্র তাতে কোন সন্দেহ নেই। দেশ বিভাগের সময়কালে চল্লিশ দশকেও পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯৮.৫% লোক ছিল আদিবাসী জুম্ম বংশোদ্ভূত। বাকি ১.৫% ছিল বাঙালি জনগোষ্ঠী যারা চাকুরী ও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সেখানে সাময়িক অবস্থান নিয়েছিল। পরবর্তীতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শাসনামলে অব্যাহতভাবে, বিশেষ করে ১৯৭৯ সাল থেকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় হাজার হাজার বহিরাগত বাঙালী পরিবারকে জুম্ম জনগণের রেকর্ডীয় বা ভোগদখলীয় বা প্রথাগত জুম ভূমির উপর বসতি প্রদান করে জুম্মদের জায়গা-জমি জবরদখল এবং জুম্মদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে বা এখনো হচ্ছে। এভাবেই নিজভূমিতে তাদেরকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা তথা জাতিগত নির্মূলীকরণের নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

অপরদিকে ময়মনসিংহের আদিবাসী অধ্যুষিত শেরপুর, শ্রীবর্দী, নালিতাবাড়ি, হালুয়াঘাট, দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা এই ছয়টি অঞ্চলের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাসমূহকে ‘আংশিক শাসন-বহির্ভূত এলাকা’ হিসেবে চালু ছিল যা আদিবাসী অঞ্চলেরই সাক্ষ্য বহন করে। উত্তরবঙ্গের শ্বাপদ-সঙ্কূল বরেন্দ্র অঞ্চলকে বা মধুপুর গড় অঞ্চলকে কর্ষণযোগ্য ও বাসযোগ্য করেছে খেটে-খাওয়া শ্রমজীবী এই আদিবাসীরা। কিন্তু তাদের জায়গা-জমি, পাহাড়-বন, আবাসস্থল শক্তির জোরে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারা বর্তমানে নিজবাসভূমে পরবাসী একশ্রেণীর অসহায় মানুষে পরিণত হয়েছে। আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের সময় থেকে তাদের উপর এই বঞ্চনা ও বৈষম্য আরো জোরদার হয়েছে।

অতি সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর বা দক্ষিণ সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বা খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে এমনি উদ্ভট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকেও এই প্রচারণার সাথে সুর মিলিয়ে আদিবাসী বিষয়ে চরম নেতিবাচক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

বস্তুতঃ আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া হলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়বে বা বৃহত্তর বাঙালী জনগোষ্ঠী অ-আদিবাসী বা বহিরাগত হয়ে যাবে এমন ধারণা সম্পূর্ণরূপে ভ্রান্ত, বর্ণবাদী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বৈ কিছু নয়। জাতিগত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য ও বঞ্চনা যতই অধিকার-ভিত্তিক গঠনমূলক সমাধানের পথ গ্রহণ করা হয় ততই সংখ্যালঘু জাতিসমূহের মধ্যে রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে উঠে এবং সাথে সাথে ততই জাতীয় সংহতি ও অখন্ডতা অধিকতর সুদৃঢ় হয়ে উঠে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি মনে করে যে, এসব জাতিসমূহকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলোকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরো শক্তিশালী হবে এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র অধিকতর সম্প্রসারিত হবে। এতে করে এদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা ও নৃতাত্ত্বিক বহুমাত্রিকতা অধিকতর সমৃদ্ধশালী হবে।

তাই দেশের নাগরিক হিসেবে মূলস্রোতধারার কর্মকান্ডে যথাযথভাবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে এবং ধর্মীয় বৈষম্যমূলক সকল বিধানাবলীর বিলোপ করতঃ ’৭২-এর সংবিধানের চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পুনর্বহাল এবং একক জাতিরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তে বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটিয়ে ধর্ম-জাতি নিরপেক্ষ সংবিধান প্রবর্তনের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নিম্নোক্ত বিষয়াবলী বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে-

(১) “উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়” হিসেবে নয়, “আদিবাসী” হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা এবং নতুন একটি তফসিলে অর্ধ শতাধিক আদিবাসী জাতিসমূহের তালিকা সংবিধানে সন্নিবেশ করা হোক;
(২) কেবল আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের অধিকার নয়, সারা দেশের আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হোক;
(৩) ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি এবং এই চুক্তির আলোকে প্রণীত আইনসমূহ সহ আদিবাসী অধ্যূষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বিশেষ শাসিত অঞ্চলের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হোক;
(৪) সংবিধানে “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী” মর্মে সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হোক;
(৫) সংবিধানে “বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহিম” ও “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব বাতিল করা হোক;
(৬) সংগঠনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির ১৭নং সংযোজনী প্রস্তাবের পরিবর্তে ’৭২-এর সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে বর্ণিত শর্তাংশ প্রতিস্থাপন করা হোক।

আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।


জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা
সভাপতি
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি


বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সুপারিশ এবং আদিবাসীদের অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন
২৩ জুন ২০১১, সকাল ১০.৩০ ঘটিকা, হোটেল সুন্দরবন, সোনারগাঁও রোড, ঢাকা


courtesy: PCJSS. 

No comments:

Post a Comment